পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ!
প্রকাশিত : 09:26 AM, 9 January 2021 Saturday

কেনিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক গ্রাম সাম্বুরু। ওই গ্রামে সাম্বুরু আদিবাসীদের বাস। এছাড়াও তুর্কানা এবং অন্য আদিবাসীরাও থাকেন। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের নানা আদিবাসী মহিলাদের মতো সাম্বুরু নারীরাও সমাজের পিছিয়ে পড়া সারিতে ছিলেন। তাদের গণ্য করা হতো দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে। সাম্বুরুর পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের প্রায় নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতেন পুরুষরা। কিছু সামাজিক কুপ্রথার জন্য তাদের যৌনাঙ্গহানি, অকথ্য নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। জোর করে নাবালিকাদের বিয়েও দিয়ে দেয়া হতো। এমনকি একাধিক পুরুষের ধর্ষণের শিকারও হতেন তারা। অথচ তাদের কথা শোনার জন্য কেউ ছিলেন না। এমনকি স্বামীর ইচ্ছা হলে স্ত্রীকে হত্যাও করতে পারত। নারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছিলেন না কেউ বরং স্বামীকে সমর্থন করার জন্য আরও অনেক পুরুষ তৈরি থাকতেন। নারীদের জন্য এ রকমই নিষ্ঠুর ছিল সাম্বুরু। মূলত স্বামীর সম্পত্তি হয়েই জীবন কাটাতেন সেখানকার নারীরা। নির্যাতন সহ্য করতে করতে এক সময় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল সাম্বুরু নারীদের। পরে গড়ে উঠল উমোজা গ্রাম। যা হয়ে উঠল নারীদের গ্রাম। যেখানে পুরুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ১৯৯০ সালে রেবেকা ললোসলি নামে এক নারী নির্যাতিত এবং বিতাড়িত আরও কয়েক জনকে নিয়ে পুরুষমুক্ত ওই গ্রাম গড়ে তোলেন। রেবেকা নিজেও একজন নির্যাতিতা। সাম্বুরুতে নিযুক্ত সেনারা নির্যাতন চালাত নারীদের ওপর। তাদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতেন সেনারা। যখন তখন নারীদের তুলে নিয়ে গিয়ে চলত ধর্ষণ। এক সময় একসঙ্গে প্রায় দেড় হাজার সাম্বুরু নারী ধর্ষিত হয়েছিলেন। স্বামীদেরও তারা সে সময় পাশে পাননি। স্বামীরা উল্টো তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। সেই দলে রেবেকাও ছিলেন। এমন আশ্রয়হীন ১৫ জনকে নিয়েই নিজেদের জন্য আশ্রয় গড়ে তোলেন রেবেকা। এখন সাম্বুরুর সব নির্যাতিতারা উমোজাতেই আশ্রয় নেন। সেখানে শুধু নারীদের কথাই চলে। মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচেন তারা। অনেক অন্তঃসত্ত্বাও আশ্রয় নেন। যদি তাদের মধ্যে কেউ ছেলের জন্ম দেন। তাহলে সেই ছেলের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত ওই গ্রামে থাকতে পারে। বয়স ১৮ বছর হয়ে গেলে তাকে উমোজা ছাড়তেই হয়।-গার্ডিয়ান
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক গণঅধিকার'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyganoadhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
দৈনিক গণঅধিকার'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।