কুমারখালী-যদুবয়রা সেতু নির্মান কাজ অর্থ সংকটে বন্ধ
প্রকাশিত : 01:58 AM, 18 September 2020 Friday

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার দক্ষিনের পাঁচ ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত গড়াই নদীর উপর কুমারখালী – যদুবয়রা সংযোগ সেতুর নির্মাণ কাজ অর্থ সংকটে বন্দ হয়ে গেছে। নির্দিষ্ট সময়ে অত্র সেতু নির্মাণ শেষ হচ্ছে না। ফলে এলাকাবাসী হতাশা ব্যক্ত করছে। কুষ্টিয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গড়াই নদীর উপর শহর খেয়া ঘাটে নির্মিত কুমারখালী-যদুবয়রা সংযোগ সেতুর নির্মানে অর্থ প্রদান করছে। ৮৯ কোটি ৯১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৯১ টাকা ব্যয়ে ৬৫০ মিটার দৈঘ্য পিসি গার্ডার সেতুটি ওয়ার্কওয়েসহ ৯ দশমিক ৮০ মিটার চওড়া করা হবে। এ ছাড়াও সেতুটির দুই পাড়ে মোট ৮০০ মিটার দৈঘ্য এপ্রোচ সড়ক ও নদী শাসনে প্রটেকটিভ ওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে সাড় তিন শত মিটার।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও রানা বিল্ডার্স যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ করছে। গত বছর ১৭ এপ্রিল কাজের ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাইলিংয়ের কাজও সমাপ্ত করেছে। নদীর তলায় ২টি খুটির বেজ ঢালাইয়ের কাজ অবশিষ্ট থাকলেও ১২টি খুটির ১১২টি পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ৫২টি পিসি গার্ডারের উপরে সেতুর স্প্যান হবে ১৩টি। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ হবে ৫০ মিটার। মোট চওড়া হবে ৯.৮০ মিটার। এপ্রোচ প্রটেকটিভ ওয়ার্ক করা হবে ৩ শত ৫০ মিটার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়ীত¦রত প্রোজেক্ট ম্যানেজার আশিক আহমেদ জানান, ইতিমধ্যেই মূল সেতুর ৩০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
মূল সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি। এ সময় তিনি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর ফলকও উন্মোচন করেন। পৌর বাস টার্মিনালে এই উপলক্ষে এক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। আগামী ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর সেতুটির নির্মাণ কাজ সমাপ্তির কথা রয়েছে, কিন্ত করোনায় চরম অর্থ সংকটে নির্দিষ্ট সময়ে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছেনা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে তিন পর্যায়ে ১৪ কোটি টাকা বিল পেয়েছে। আরো ৬ কোটি টাকার বিল জমা দিলেও সি গ্রেডের এই প্রকল্পে অর্থ ছাড় হচ্ছেনা। ফলে অর্থ সংকটে কাজ বন্দ হয়ে গেছে। এদিকে সেতুর সর্ব শেষ ৬ কোটি টাকার বিল জমা দেওয়া ছাড়াও আরো কয়েক কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে সেতুর দুই পাশে নদী শাসন ও এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করার ক্ষেত্রে এখনও ডিজাইন এবং অর্থ বরাদ্ধ হয়নি। সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহন শুধু মাপ-জোকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কুমারখালী পাড়ে ৩শত ও যদুবয়রা পাড়ে ৫শত মিটার দৈর্ঘ সড়ক নির্মানের কথা রয়েছে। অর্থ সংকট ও বিল না পাওয়ার কারনে কাজ বন্দের বিষয়টি ইতিমধ্যেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দকে অবগতও করেছেন। তারাও এবিষয়ে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
গড়াই নদীর উপর নির্মানাধীন চতুর্থ এই সড়ক সেতুর নাম সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ গোলাম কিবরিয়া করার দাবী উঠে আসছে শুরু থেকেই। গড়াই নদীতে উক্ত সেতুটি নির্মাণ হলে কুমারখালী উপজেলার সাথে ঝিনাইদহ মাগুরার দূরত্ব এবং গড়াই নদী দ্বারা বিভক্ত কুমারখালীর পাঁচ ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘ দিনের দূর্ভোগ কমবে বলে এলাকাবাসী মনে করে। কিন্ত অর্থ সংকটে কাজ বন্দ হয়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করছে এলাকাবাসী ।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক গণঅধিকার'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyganoadhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
দৈনিক গণঅধিকার'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।